• মঙ্গলবার ০২ জুলাই ২০২৪ ||

  • আষাঢ় ১৭ ১৪৩১

  • || ২৪ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

সাদিক অ্যাগ্রোর বাণিজ্য চলছিল ট্রেড লাইসেন্স ছাড়াই

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২৮ জুন ২০২৪  

গরু চোরাচালান, দেশি গরু-ছাগল কিনে বিদেশি বলে বিক্রি করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে সাদিক অ্যাগ্রোর স্বত্বাধিকারী পরিচয় দেওয়া মো. ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে, বস্তুত তাঁর এই ব্যবসাই পরিচালিত হচ্ছে অবৈধভাবে। নিয়ম অনুযায়ী, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে সাদিক অ্যাগ্রোর নামে কোনো ট্রেড লাইসেন্স নেননি ইমরান হোসেন। 

‘সাদিক অ্যাগ্রো’ নামে ডিএনসিসিতে একটি ট্রেড লাইসেন্স করা হলেও সেটি তোহিদুল আলম জেনিথ নামের এক ব্যক্তির। ওই ট্রেড লাইসেন্সে ব্যবসার ধরন ‘খামার’ নয়, উল্লেখ করা হয়েছে ‘ডেইরি’ হিসেবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে ২০২২ সালের ৫ ডিসেম্বর ‘সাদিক অ্যাগ্রো বিজনেস’ নামে একটি ট্রেড লাইসেন্স নেন মো. ইমরান হোসেন। যেখানে ব্যবসার ধরন দেওয়া হয়েছে ‘রেস্টুরেন্ট (এসি)’। ব্যবসার প্রকৃতি দেওয়া হয়েছে একক। ঠিকানা দেওয়া হয়েছে মোহাম্মদপুর ৭ নম্বর লোহার গেট, নবীনগর হাউজিং বেড়িবাঁধ। ঠিকানা হিসেবে যে জায়গার উল্লেখ করা হয়েছে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত সেখানেই চলছিল ইমরানের গরুর খামারের কার্যক্রম। উত্তর সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে গতকাল দুপুরের পর সেটি উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রায় দুই বিঘার মতো জায়গাটিতে একতলা টিনশেড ভবন তুলে ব্যাবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন ইমরান।

অথচ জায়গাটি পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং উত্তর সিটি করপোরেশনের। একই ঠিকানা ব্যবহার করে ২০১৯ সালের ১৪ জুলাই শুধু ‘সাদিক’ নামে আরেকটি ট্রেড লাইসেন্স নেন ইমরান হোসেন। সেখানে ব্যবসার ধরন উল্লেখ করা হয় ‘আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, সরবরাহকারী (অফিস)। কিন্তু সেখানেও এ ধরনের কোনো ব্যবসা পরিচালিত হচ্ছিল না। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন থেকে ২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তোহিদুল আলম জেনিথকে ‘সাদিক অ্যাগ্রো’ নামে ট্রেড লাইসেন্স দেওয়া হলেও স্বত্বাধিকারী হিসেবে পরিচয় দিয়ে আসছেন ইমরান হোসেন। বিষয়টি নিয়ে তোহিদুল আলম জেনিথকে প্রশ্ন করলে তিনি  বলেন, ‘ইমরান হোসেন আমার বন্ধু। তিনি এই ট্রেড লাইসেন্স আমার নামে করিয়েছেন। আমি এই ব্যবসার ডেইরি সেক্টরটা দেখি। তাই আমার নামে ট্রেড লাইসেন্স।’ তাহলে খামার পরিচালনার ট্রেড লাইসেন্স কোথায় কিংবা কার নামে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আমি জানি না, ইমরানের সঙ্গে কথা বলে জানাতে হবে।’

ট্রেড লাইসেন্স না নিয়েই কিভাবে এত দিন বিতর্কিত এই ব্যাবসায়িক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছিলেন, তা জানতে গতকাল মোহাম্মদপুর সাতমসজিদ রোড এবং বেড়িবাঁধের ব্যাবসায়িক ঠিকানায় গিয়ে ইমরান হোসেনকে পাওয়া যায়নি। পরে তাঁর ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে বারবার চেষ্টা করেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। সাদিক অ্যাগ্রোর ট্রেড লাইসেন্স বিষয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৫-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোতাকাব্বীর আহমেদ  বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যেটা জেনেছি, সাদিক অ্যাগ্রোর নামে কোনো খামার ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স সিটি করপোরেশন থেকে নেওয়া হয়নি। কাজেই অবৈধভাবেই এই ব্যবসা পরিচালনা করা হচ্ছিল। আমরা আরো খোঁজখবর নিচ্ছি।’