• শনিবার ০৬ জুলাই ২০২৪ ||

  • আষাঢ় ২২ ১৪৩১

  • || ২৮ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

বিবিধ আলোচনায় থাকবে বিশ্বকাপ

মানিকগঞ্জ বার্তা

প্রকাশিত: ২ জুলাই ২০২৪  

সদ্যঃসমাপ্ত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলের পারফরম্যান্স পর্যালোচনার বিষয়টি আলোচ্যসূচিতেই নেই। না থাকলেও সেটি যে ‘মিসেলিনিয়াস’ বা বিবিধ বিষয়ের মধ্যে ঢুকে পড়বে, তা নিশ্চিত করে গতকাল দুপুরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন চৌধুরী সংবাদমাধ্যমকে বলছিলেন, ‘বাংলাদেশ দল আইসিসি বা এসিসির কোনো টুর্নামেন্টে অংশ নিয়ে আসার পর পারফরম্যান্স নিয়ে আলোচনা হয়। এবারও তা হবে।’

২৪ ঘণ্টা পর আজ দুপুরে অনুষ্ঠেয় বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের সেই সভায় বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স নিয়ে আলোচনার গতিপথ যে খুব মসৃণ হচ্ছে না, সে আভাসও পাওয়া যাচ্ছে। জাতীয় দলের দেখভালের দায়িত্বে থাকা ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস কয়েক দিন ধরেই তাঁর মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আসছেন। বোলিং নিয়ে প্রশংসা বরাদ্দ রাখলেও ব্যাটিং নিয়ে নাখোশ ছিলেন তিনি। তবে সুপার এইটে যাওয়ার জন্য সন্তুষ্টিও প্রকাশ করেছেন। কিন্তু পরিচালনা পর্ষদে তাঁর কতজন সহকর্মী একই মত পোষণ করছেন, তা নিয়ে সন্দেহ উসকে দেওয়ার মতো বক্তব্য কেউ কেউ দিয়েছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পরিচালককে গত সন্ধ্যায় বেশ অসন্তুষ্টই মনে হলো, ‘এখন যদি আপনি ব্যর্থতা ধামাচাপা দিতে চান, তাহলে বলতে পারেন যে সুপার এইটে যাওয়াটা আমাদের বিরাট সাফল্য।’ কারো কারো চোখে সেমিফাইনালে যাওয়ার সুযোগ হারিয়ে আসা দল শেষ বিচারে ব্যর্থই। তাই বিসিবির আজকের সভায় পরিচালকদের মধ্যে যে নাজমুল হোসেনদের বিশ্বকাপ পারফরম্যান্স নিয়ে মতবিরোধ হওয়ার সম্ভাবনাই প্রবল। এর সঙ্গে যোগ হয়ে যেতে পারে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স মূল্যায়নে গঠিত কমিটির প্রতিবেদনের বিষয়ে বেশির ভাগ পরিচালককে অন্ধকারে রাখা নিয়ে ক্ষোভও। পরিচালকদের তিনজন ছিলেন সেই কমিটির সদস্য। তাঁরা ক্রীড়ামন্ত্রী ও বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসানের কাছে প্রতিবেদন জমা দিলেও সেটি এখন পর্যন্ত আলোর মুখ দেখেনি বিসিবির অন্দরমহলেই। এক পরিচালকের উষ্মা, ‘ওই প্রতিবেদনে না পরের বিশ্বকাপে ভালো করার জন্য কিছু পরামর্শ থাকার কথা? কোথায় সেগুলো? প্রতিবেদন নির্দিষ্ট কয়েকজন লোকের ফাইলে যদি বন্দি হয়ে থাকে, তাহলে ওই কমিটিটা করারই-বা কি দরকার ছিল?’

ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকে মাত্র দুটি জয় নিয়ে ফেরা বাংলাদেশ দল সাত মাসের মধ্যে কুড়ি-বিশের বিশ্ব আসরে একটি ম্যাচ বেশি জিতেছে। ২০০৭ সালের পর দ্বিতীয়বারের মতো সুপার এইটে গেলেও ব্যাটিং এই দলটির টি-টোয়েন্টি উপযোগিতা নিয়ে বারবারই প্রশ্ন তুলে গেছে। বিশেষ করে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১২.১ ওভারে ১১৬ রান তাড়া করতে পারলে যেখানে সেমিফাইনালের দুয়ার খুলে যেত, সেখানে শুরুতে উইকেট হারানো নাজমুলরা সেই চেষ্টা বাদ দেওয়ায় বিশ্বজুড়েই সমালোচিত হয়েছেন।

তবে শুধু সেই ম্যাচই নয়, পুরো টুর্নামেন্টেই ব্যাটারদের বাজে পারফরম্যান্স জাতীয় দলের কোচিং স্টাফের বিদেশিদের নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। অবধারিতভাবে তাঁদের প্রসঙ্গও যে উঠতে যাচ্ছে, সেটিও বোঝা গেল এক পরিচালকের কথায়, ‘হেড কোচ তাহলে কী করছেন? এর বাইরেও আমাদের ব্যাটিং কোচ আছেন। তিনি ভালো কাজ করে থাকলে ব্যাটিংয়ের এই অবস্থা কেন? এমন না যে এই বিশ্বকাপেই শুধু এমন হয়েছে। ব্যাটিং খারাপ হচ্ছে অনেক দিন থেকেই। তিনি তাহলে কী কাজটি করছেন? আসলে এখন আমরা যে অবস্থায় এসে পৌঁছেছি, অনেক কিছু পরিবর্তন না করা হলে কিছুই বদলাবে না।’

এই বদলের হাওয়ায় ব্যাটিং কোচ ডেভিড হেম্পের নাম আবার উড়ে যায় কি না, আজকের সভার পর সে বিষয়ে আরো স্পষ্ট ধারণা মিলতেও পারে। অবশ্য এই সভার আলোচ্যসূচিতে থাকা আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ও অনেক সময় নিয়ে ফেলতে পারে। যেমন—পূর্বাচলে শেখ হাসিনা স্টেডিয়ামের ঠিকাদার নিয়োগে আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা হবে। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের পাশে ক্রিকেট মাঠের জন্য জমি কেনার বিষয়ও আছে আলোচ্যে। স্থানীয় কোচদের জন্যও সুখবর আসছে এই সভা থেকে। আজকের সভায় তাঁদের নতুন কাঠামো অনুমোদন পেলে বিসিবিতে কর্মরত দেশি কোচদের বড় অঙ্কের বেতন বাড়বে।